এক বছরে মানসিক হাসপাতালে দেড় হাজার রোগী সুস্থ


সুষ্ঠু সেবা, পরিচর্যা ও সঠিক চিকিৎসা প্রদানে পাবনার মানসিক হাসপাতালে ২০১৮ সালে ১ হাজার ৫১৮ জন মানসিক রোগী সুস্থ হয়ে পরিবারের কাছে ফিরে গেছে। এর ভেতর ৩২৭ জন মহিলা রোগীও রয়েছে।

পাবনা মানসিক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মো. আব্দুল বারী জানান, প্রতি বছর ভর্তিকৃত ও সুস্থ রোগীদের বার্ষিক প্রতিবেদন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরন করতে হয়।

প্রতিবেদনের তথ্যের আলোকে তিনি জানান, ২০০৯ সালের পর থেকে ২০১৮ সালে মানসিক রোগী ভর্তির অবস্থান তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ২০১৬ সালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬২৫ জন। এর ভেতরমহিলা রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৩৮ জন। এ বছরে সুস্থ হয়ে পরিবারেরকাছে ফিরে যায় ১ হাজার ৬১২ জন। তার ভেতর মহিলা রোগী ছিল ৩১৮জন। ২০১৭ সালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৪১ জন। এর ভেতর মহিলা রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৪৬ জন। এ বছরে সুস্থ রোগীর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬৪৬ জন। আর এর ভেতর মহিলা রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৫২ জন। তিনি আরো জানান, বর্তমানে হাসপাতালে সম্পূর্ন সুস্থ রোগী তার কোন ওয়ার্ডে ভর্তি নাই।

পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ও সাইকিয়াট্রিক বিশেষজ্ঞডা. ড. তম্ময় প্রকাশ বিশ্বাস জানান, মানসিক রোগী দুই প্রকার। একটি মৃদু ও অপরটি গুরুতর। মৃদু মানসিক রোগীদের বর্হি:বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ব্যবস্থাপত্র ও সরকারী ঔষুধ প্রদানে পরিবারের সাথে থেকে নিয়মিত ঔষুধ সেবনের পরামর্শ দেয়া হয়। এতে অনেকেই বাড়ী থেকেই সুস্থতা অর্জন করে থাকে। গুরুতর রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে থাকে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ভর্তিকৃত রোগীদের এ্যাডমিশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েথাকে। তখন তারা বিভিন্ন অসংলগ্ন কথবার্তা, উচ্ছৃঙ্খল আচরন, মারপিটসহ বিভিন্ন কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে। এখানে তাদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের পরে কিছুটা সুস্থ হলে বিভিন্ন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। তখন তার বেশ সুস্থতা বোধ করে।সাইকিয়াট্রিক শাস্ত্র মতে অনেকটা সুস্থ মানসিক রোগীরা নিজেকে অসুস্থ বা মানসিক রোগী মানতে নারাজ থাকে। তারা ভাবে সে সুস্থ কিন্তু অন্যরা অসুস্থ। সে কারনে বেশ সুস্থ রোগীরা বেশী কথা বলে থাকে এবং অন্যকে কথা বলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে।

আবার মানসিক রোগীরা একজন কথা বললে অপরজন তাকে থামিয়ে দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করে। অপরিচিত কোন লোক দেখলে তার কাছে দলবদ্ধভাবে এসে হাজির হয় তার মনের কথা বলার জন্য। বেশ সুস্থতার কারনে সে অতীতের কিছু স্মৃতি ফিরে পেয়ে থাকে। কোন লোক পেলে সে ওই স্মৃতি প্রকাশ করে সম্পূর্ন সুস্থ দাবী করে বাড়ী যাবার জন্য আকুতি জানিয়ে থাকে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বর্তমানে হাসপাতালে কোনসম্পূর্ন সুস্থ রোগী নাই। বেশ সুস্থ রোগী মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ডে রয়েছে। তাদের মধ্যে যারা সম্পূর্ন সুস্থতা অবলম্বন করছে তাদের অভিভাবককে ডেকে এনে পারিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।

Post a Comment

0 Comments