ডাকাতি মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করলো পিবিআই পাবনা জেলা


“প্রেস বিজ্ঞপ্তি” ঘটনা-১:দীর্ঘ এক বছর পর ডাকাতি
মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব
ইনভেস্টিগেশন), পাবনা জেলা। গত ১৬/০৯/২০১৭ খ্রিঃ
রাত্রি অনুমান ০২.৩০ ঘটিকার দিকে পাবনা জেলার
ঈশ^রদী থানাধীন স্কুলপাড়া গ্রামস্থ শাহান শাহ
আলমগীর @ বাবু (৪৫) এর দোতলা বাড়ীতে ডাকাতি
সংঘটিত হয়। উক্ত ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা
ডাকাত দলের অন্যতম প্রধান সর্দারকে গ্রেফতার করেছে
পিবিআই, পাবনা জেলা। গ্রেফতারকৃত আসামী
রাজবাড়ী জেলার সদর থানাধীন হরিণধরা গ্রামস্থ আব্দুল
মন্ডলের পুত্র খোরশেদ মন্ডল (৫০)। গত ১৫/০৯/২০১৮ খ্রিঃ
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ থানাধীন দৌলদিয়া ফেরী
ঘাট এলাকা হতে ঈশ্বরদী ও সুজানগর থানায় রুজুকৃত পৃথক
দুটি ডাকাতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই
পাবনা জেলার এসআই মোঃ সামরুল হোসেন ও এসআই
মোঃ সবুজ আলী এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে
তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার বিষয়ে পাবনা জেলার
ঈশ^রদী থানায় শাহান শাহ আলমগীর @ বাবু (৪৫) এর
ভাগিনা জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার
সাংবাদিক হাসান মাহমুদ বাদী হয়ে ডাকাতি মামলা
নং-৬১(০৯)২০১৭ দায়ের করেন। দীর্ঘ প্রায় ১০ মাস থানা
পুলিশ তদন্ত করেও কোন কুল কিনারা করতে পারেনি।
অতঃপর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ মামলার তদন্তভার পিবিআই,
পাবনা জেলার উপর অর্পণ করে। পিবিআই, পাবনা জেলা
প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস, এম, ফজলুল হক
মামলাটি তদন্তের নির্দেশনা পেয়ে এসআই মোঃ সবুজ
আলীর উপর তদন্তভার অর্পণ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা
এসআই মোঃ সবুজ আলী দুই মাসের মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তির
সহায়তায় মামলাটির রহস্য উদঘাটন করে উক্ত ঘটনার
সাথে জড়িতদের সনাক্ত করেন।
ডাকাতির উক্ত ঘটনাটি পাবনা জেলার ঈশ^রদী
থানাধীন স্কুলপাড়া গ্রামস্থ শাহান শাহ আলমগীর @ বাবু
(৪৫) এর দোতলা বাড়ীতে ঘটে। ঘটনাটি ঘটানোর ৫/৭ দিন
পূর্বে ডাকাত সর্দার খোরশেদ মন্ডলসহ তার সহযোগী
কয়েকজন উক্ত বাড়ীটি ভালভাবে দেখে-শুনে ধারণা
নিয়ে যায়। পরবর্তিতে গত ইং ১৬/০৯/২০১৭ তারিখে রাত
অনুমান ০২.৩০ ঘটিকায় ধৃত আসামী রাজবাড়ী জেলার সদর
থানাধীন হরিণধরা গ্রামস্থ আব্দুল মন্ডলের পুত্র খোরশেদ
মন্ডল (৫০) তার সহযোগী ডাকাতদের সহায়তায় কেচি
গেটের তালা ভেঙ্গে প্রথমে নিচ তলার পূর্বপাশের্^
ভাড়াটিয়া জেসমিন এর ঘরে প্রবেশ করে একটি মোবাইল
ফোন ও পশ্চিম পাশের্^র ভাড়াটিয়া হান্নানের বাসার
গ্রিলের তালা ভেঙ্গে বেড রুমের ড্রেসিং টেবিলের
ড্রয়ার থেকে ১৫,০০০/- টাকা ও দ্বিতীয় তলায় শাহান
শাহ আলমগীর @ বাবু (৪৫) এর কক্ষে প্রবেশ করে
আলমারির তালা ভেঙ্গে নগদ ২,০০,০০০/- টাকাসহ মোট
৮,৫৯,০০০/-টাকা মুল্যমানের বিভিন্ন ধরণের
স্বর্নালংকার, মোবাইল সেট ও ট্যাব নিয়ে যায়।
মালামালগুলি নিয়ে যাওয়ার সময় শাহান শাহ আলমগীর
@ বাবু (৪৫) ও তার বাড়ীর লোকজন বাধা দিলে
ডাকাতরা তাদের মাথায় রামদা দ্বারা কোপ মেরে
কাটা রক্তাক্ত জখম করে মালামালগুলি নিয়ে চলে যায়।
ঘটনা-২
ডাকাতির অন্য আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল পাবনা জেলার
সুজানগর থানাধীন বোনকোলা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা
ও শিক্ষক মোঃ মশিউর রহমানের বাড়ীতে। ইং
২০/০৪/২০১৭ তারিখ রাত্রি অনুমান ০০.৩০ ঘটিকার সময়
খোরশেদ মন্ডলসহ তার সহযোগী ১০/১২ জন ডাকাত উক্ত
বাড়ীর বেলকুনির গ্রিলের তালা ভেঙ্গে শয়ন ঘরের
মধ্যে প্রবেশ করে মশিউর রহমানের চাচাত ভাই মোঃ
মোকছেদ আলম ও তার স্ত্রী মোছাঃ রওশন আরা
পারভীনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের হাত,পা,
মুখ কাপড় দিয়ে বেধেঁ ওয়্যার ড্রপের তালা ভেঙ্গে নগদ
টাকাসহ স্বর্ণালংকার, ডিস এন্টিনার কন্ট্রোল রুমের
ইডিএফ মেশিন ০২ টি, ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ড সাপ্লাই
মেশিন , একটি ডিবিবিএল দোনলা বন্দুক এবং ডাকাতরা
গ্রিলের তালা ভেঙ্গে বাদীর চাচাত ভাই মোঃ সাইদুর
রহমান @ শহীদ ও তার স্ত্রী মোছাঃ হেলেনা বেগমকে
অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের ষ্টীলের আলমারীতে
থাকা স্বর্ণালংকারসহ অনুমান ২৬ লক্ষ টাকার মালামাল
ও নগদ টাকা লুন্ঠণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার বিষয়ে
পাবনা জেলার সুজানগর থানায় মোঃ মশিউর রহমান (৭০)
বাদী হয়ে ডাকাতি মামলা নং-২০(০৪)২০১৭ দায়ের করেন।
প্রায় ০৪ মাস থানা পুলিশ তদন্ত করেও কোন কুল কিনারা
করতে পারেনি। অতঃপর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ মামলার
তদন্তভার পিবিআই, পাবনা জেলার উপর অর্পণ করে।
পরবর্তিতে এসআই মোঃ সামরুল হোসেন মামলাটির তদন্ত
শুরু করেন।
গ্রেফতারকৃত আসামী তার সহযোগীদের সহায়তায় উক্ত
বাড়ীতে দুটি পৃথক ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার
কথা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের নিকট স্বীকার করেছে
এবং বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
প্রদান করেছে।
এর আগে সুজানগর থানার উক্ত ডাকাতির ঘটনায় এসআই
মোঃ সামরুল হোসেন দেড় বছর পর উক্ত ঘটনায় তথ্য
প্রযু্িক্তর সহায়তায় মামলাটির রহস্য উন্মোচন করে ডাকত
সর্দার ১। মোঃ খোরশেদ মন্ডল (৪৯), পিতা-মৃত আব্দুল
মন্ডল, সাং-হরিণধরা, থানা ও জেলা-রাজবাড়ী ও তার
সহযোগী ২। মোঃ ফেরদৌস শেখ (৩০), পিতা-আব্দুল শেখ,
সাং-বহরপুর, থানা-বালিয়াকান্দি, জেলা-রাজবাড়ী, ৩।
মোঃ সিদ্দিক সর্দার (৪০), পিতা-আলী সর্দার, সাং-
বালিয়াডাঙ্গী, ৪। মোঃ জহির মন্ডল (৪৮), পিতা-মোঃ
আজগর মন্ডল, সাং- মোহনপুর, নাজিরগঞ্জ, ৫। মোঃ বাচ্চু
শেখ (৪০), পিতা-জামাল শেখ, ৬। মোঃ রিকন মিয়া (৫৫),
পিতা-রউফ মিয়া, উভয়সাং-বোনকোলা, সর্ব থানা-
সুজানগর, জেলা-পাবনাদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ
আদালতে প্রেরণ করলে ০৪ জন আসামী বিজ্ঞ আদালতে
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
পিবিআই, পাবনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস, এম,
ফজলুল হক এর সার্বিক তত্ত্ববধানে এসআই মোঃ সামরুল
হোসেন ও এসআই মোঃ সবুজ আলীর নেতৃত্বে তদন্ত টিম
গঠন করা হয়। মামলার মূল রহস্য উদঘাটনসহ ডাকাতদের
গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান
পরিচালনা করা হয়। মূল ডাকাত গ্রেফতার হওয়ায়
ঈশ^রদী থানা ও সুজানগর থানা এলাকার লোকজনের
মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
পৃথক দুটি ডাকাতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই
মোঃ সামরুল হোসেন ও এসআই মোঃ সবুজ আলী জানান
ডাকাতরা অত্যন্ত চালাক প্রকৃতির। অনেক কৌশল
অবলম্বন করে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গ্রেফতার
করা হয়। তাদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
তারা উভয় ডাকাতির ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ত করে
বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান
করেছে। তাদের স্বীকারোক্তি মতে অন্যান্য
ডাকাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Post a Comment

0 Comments