এক মাসে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৮ শতাংশ।
ভারতীয় পেঁয়াজের দামও ১৩ শতাংশ বেড়েছে, যা
কেজিপ্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কম।
ভারতীয় পেঁয়াজও প্রতি কেজি ৪০ টাকা দরে বিক্রি
হচ্ছে।
ভারতে বৃষ্টিতে পেঁয়াজ তোলা যায়নি। এতে ভারতের
ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য বাড়িয়েছেন।
রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি
পেঁয়াজের দাম উঠেছে ৬০ টাকা। যা এক মাস
আগে ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। সরকারি সংস্থা
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের
(টিসিবি) হিসাবে দাম বেড়েছে প্রায় ১৮
শতাংশ।
দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় যাঁরা
ভারতীয় পেঁয়াজ কিনতে চান, তাঁদের জন্যও
দুঃসংবাদ। ভারতীয় পেঁয়াজের দামও ১৩
শতাংশ বেড়েছে, যা এখন প্রতি কেজি ৪০
টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দেশের মানুষ বছরের বেশির ভাগ সময় ৩৫-৪০
টাকা কেজির মধ্যে পেঁয়াজ কিনতে অভ্যস্ত।
কিন্তু এবার মৌসুমের শুরুতে দেশি পেঁয়াজের
কেজি ৪০ টাকায় উঠে যায়। অবশ্য গত বছর
শেষের দিকে প্রতি কেজির দর উঠেছিল ১৪০
টাকা।
মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিক্রেতারা দেশি
পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামূলক কম থাকা এবং
ভারতে পেঁয়াজের দাম ও আমদানি খরচ বেড়ে
যাওয়াকে দায়ী করছেন। তাঁরা বলছেন, গত
মৌসুমে দেশি পেঁয়াজের আবাদ বৃষ্টিতে
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার চালকের লাইসেন্স ও
ফিটনেস সনদ না থাকার কারণে ট্রাক কম
পাওয়া যাচ্ছে। এতে ট্রাক ভাড়া বেড়ে গেছে।
পাশাপাশি কিছুদিন আগে ভারতের বাজারেও
পেঁয়াজের দাম বেড়েছে।
পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের পাইকারি পেঁয়াজ
ব্যবসায়ী নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, তাঁর
দোকানে দেশি পেঁয়াজ ৪৬-৪৭ টাকা কেজি
দরে বিক্রি হচ্ছে, যা খুচরা পর্যায়ে ৫৫-৫৬
টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। ভারতীয় পেঁয়াজ
মানভেদে ৩১-৩৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে
জানান তিনি।
ওই ব্যবসায়ী বলেন, হঠাৎ করেই ট্রাক ভাড়া
বেড়েছে। কিছুদিন আগেও ভোমরা থেকে এক
ট্রাক পেঁয়াজ ঢাকায় আনতে খরচ হতো ২২-২৩
হাজার টাকা, যা এখন ২৬-২৭ হাজার টাকা
পড়ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)
হিসাবে দেশে বছরে ১৮-১৯ লাখ টন পেঁয়াজ
উৎপাদিত হয়। এর বাইরে আমদানি হয় ৭-৮ লাখ
টন, যার মূল উৎস ভারত। ভারত থেকে পেঁয়াজ
আমদানি হয় ভোমরা, সোনামসজিদ, হিলি,
বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। বাংলাদেশ
ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে
দেশে ৩২ কোটি ৫২ লাখ ডলারের পেঁয়াজ
আমদানি হয়েছে। এ পণ্য আমদানিতে ব্যয়
বেড়েছে প্রায় ৮২ শতাংশ।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক
গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ গতকাল শনিবার
প্রথম আলোকে বলেন, ভারতের মহারাষ্ট্রের
নাসিক অঞ্চলে গত সপ্তাহে বৃষ্টিতে মাঠ
থেকে পেঁয়াজ তোলা যায়নি। এতে ভারতের
ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য
বাড়িয়েছেন। এখন প্রতি কেজি পেঁয়াজ হিলি
বন্দর পর্যন্ত আনতে খরচ পড়ছে ২৭-২৮ টাকা।
তিনি জানান, দাম বাড়লেও পেঁয়াজ আমদানি
বেড়েছে। ফলে দাম আর বেশি বাড়ার সুযোগ
নেই।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিঞার
বাজারে আড়তে গত মঙ্গলবারও প্রতি কেজি
পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৮ টাকা। কেজিপ্রতি
সাত টাকা বেড়ে গতকাল পাইকারি দর ওঠে ৩৫
টাকায়। খুচরায় এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০
টাকায়। দেশি পেঁয়াজ ৫০ টাকা থেকে বেড়ে
হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথম
আলোকে বলেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ
চাহিদার তুলনায় খুবই কম। নতুন মৌসুম শুরু হবে
ডিসেম্বরে।

0 Comments